বদ্রীনাথ ধামে পুজো হয় কিন্তু শঙ্খ বাজে না – কেন?

SATYAM NEWS
ভারতের অন্যতম তীর্থ স্থান বদ্রীনাথ ধাম। ভারতের পাঁচ ধামের অন্যতম এই বদ্রীনাথ ধাম। এখানে নিয়ম মেনে পুজো হলেও এখানে কখনো শঙ্খ বাজানো হয় না। কিন্তু কেন? এই নিয়ে পুরানে আছে দুটি কিংবদন্তি। তাছাড়াও আছে একটি বিজ্ঞান সম্মত কারণ। শঙ্খ বাজানোকে খুব শুভ বলে মনে করা হয়। বাড়িতে নিত্যদিনের পূজো থেকে যেকোনো বড় পূজোর আয়োজন করা হলে শঙ্খ বাজানো হয়। ভগবান বিষ্ণুর খুব প্রিয় হল শঙ্খ। তবে বদ্রীনাথ ধামে কখনোই পূজোর সময় ছাড়াও কোনোও সময়ই কিন্তু শঙ্খ এখানে বাজানো হয় না। এবার আসা যাক পুরানের দুটি কিংবদন্তিতে।
প্রথম কিংবদন্তি তে বলা হয়েছে, মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছে ভগবান বদ্রীর একটি শালগ্রাম মূর্তি। এই মূর্তিটি আদি গুরু শঙ্করাচার্য চতুর্থ শতকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কথিত আছে, বদ্রীনাথ ধামে দেবী লক্ষ্মী তুলসী রূপে ধ্যানমগ্ন ছিলেন, যখন তিনি ধ্যানমগ্ন অবস্থায় ছিলেন তখন ভগবান বিষ্ণু শঙ্খচূর্ণ নামে এক রাক্ষসকে বধ করেছিলেন। কোন শুভ কাজ করার সময় শঙ্খ বাজানো হয়, কিন্তু ভগবান বিষ্ণুর বধের পর শঙ্খ বাজাননি। লক্ষ্মীর একাগ্রতা নষ্ট করতে চাননি তিনি। আর সেই কারণে আজও বদ্রীনাথ মন্দিরের শঙ্খ বাজানো হয় না।
দ্বিতীয় কিংবদন্তি হলো – হিমালয় রাক্ষসের আতঙ্কে সেসময় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। সকলে প্রবেশ করতে পারতেন না মন্দিরে। ঋষি, মুনিরা ধ্যানে বসতে পারতেন না। সেই সময় রাক্ষসের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ হয়ে ঋষি অগস্থ ভগবতী মাতার দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সে সময় ভগবতী কুষ্মাণ্ড দেবী রূপে আবিভাব হয়। নিজের ত্রিশূল দিয়ে রাক্ষসদের বধ করেন। এসময় তথাপি এবং বথাপি নামের দুই রাক্ষস পালিয়ে যায়। এসময় তথাবি মন্দাকিনী নদীতে ঝাঁপ দেয় এবং বতাপি মন্দিরের বদ্রীনাথ মন্দিরের একটি শঙ্খের ভিতরে ঢুকে পড়ে। মনে করা হয় যদি ওই শঙ্খ বাজানো হয় তাহলে ওই রাক্ষস বেরিয়ে আসতে পারে। তাই শঙ্খ বাজানো হয় না বদ্রীনাথ মন্দিরে।
এছাড়াও বলা হয়, বদ্রীনাথ মন্দিরে শীতকালে প্রচুর পরিমাণে তুষারপাত হয়। যদি তুষারপাতের সময় শঙ্খ বাজানো হয় তবে তুষারঝড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। আবার শঙ্খের আওয়াজে অনেক সময় ধস নামার সম্ভাবনা থাকে, তাই এই কারণে মন্দিরে শঙ্খ বাজানো হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *