মে মাসে বাংলার বুকে কেন ঘনঘন আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়? আয়লা, আমফান, ইয়াসের পর এবার রেমাল!
মে মাসে বাংলার বুকে কেন ঘনঘন আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়? আয়লা, আমফান, ইয়াসের পর এবার রেমাল!
বারবার কেন মে মাস?
গত কয়েক বছর ধরে মনে হচ্ছে, মে মাস যেন বাংলার জন্য বিপর্যয়ের সময়কাল। ২০০৯ সালের ২৫ মে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় আয়লা। ২০১৯ সালের ৩ মে ফণী, ২০২০ সালের ২০ মে আমফান এবং ২০২১ সালের ২৬ মে ইয়াস। আর এবার ২০২৪ সালের মে মাসেও ঘূর্ণিঝড় রেমাল।
কারণ কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, মে মাসে বেশ কিছু কারণ একসাথে মিলে এই ঘটনার জন্য দায়ী।
- উষ্ণ বায়ুপ্রবাহ: মে মাসে বঙ্গোপসাগর উষ্ণ থাকে। এর ফলে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলে উঠে।
- নিম্নচাপ: মে মাসে দক্ষিণ-পূর্ব মৌসুমী বায়ু প্রবাহ সক্রিয় থাকে। এর ফলে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়।
- পশ্চিমী বায়ুপ্রবাহ: উত্তর ভারতের উপর দিয়ে আসা শুষ্ক ও উষ্ণ পশ্চিমী বায়ুপ্রবাহ বঙ্গোপসাগরের উপরের לחה বাতাসের সাথে মিশে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি করে।
প্রভাব
এই ঘূর্ণিঝড়গুলো বাংলার উপকূলীয় এলাকায় প্রচণ্ড ক্ষয়ক্ষতি করে। ঝড়ো হাওয়া, ভারী বৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা – সব মিলিয়ে ব্যাপক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়।
সতর্কতা ও প্রস্তুতি
ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা ও প্রভাব কমাতে সরকার দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ, যেমন উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ নির্মাণ, বনায়ন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদি প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে।
তবে, সাময়িকভাবে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকাও জরুরি। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পেলে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়া, সরকারের নির্দেশাবলী মেনে চলা এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সম্ভার তৈরি রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
উপসংহার
মে মাস যেন বাংলার জন্য এক ভয়ঙ্কর মাসে পরিণত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপের পাশাপাশি সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা ও সচেতনতাই এই মাসের বিপর্যয় কমাতে পারে।